শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর জীবনী

এশীয় রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী, নভেম্বর ১৯, ১৯১৭ অক্টোবর ৩১, ১৯৮৪ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের প্রথম ও আজ পর্যন্ত একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। প্রভাবশালী নেহেরু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করায়, তিনি এক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেন। পিতামহ মতিলাল নেহেরু একজন প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা ছিলেন। পিতা জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৪১ সালে অক্সফোর্ড থেকে ফিরে এসে ইন্দিরা গান্ধী পিতার সাথে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। সাল থেকে অপেশাগত ভাবে জওহরলাল নেহেরুর অফিস সহকারীর কাজ করে আসছিলেন। সালের জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর ভারতের রাষ্ট্রপতি তাকে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেন। ইন্দিরা লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মন্ত্রীসভায় তথ্য ও প্রচার মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। বাহাদুর শাস্ত্রীর হঠাৎ মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কংগ্রেস সভাপতি কে কামারাজের এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা ছিল।

জীবন

তার শক্তির পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশের সাহস প্রথম জীবনেই সঞ্চয় করেছিলেন৷ নভেম্বর মাসে এলাহবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবার সবসময়ই জড়িত ছিল রাজনীতিতে৷ কারণে ছোটবেলা থেকেই বাপ দাদার রাজনৈতিক মতাদর্শের দিকে ঝুঁকে পড়েন ইন্দিরা গান্ধী৷ তখনো ব্রিটিশদের দখলে৷ ভারত দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি৷ বয়স যখন মাত্র চার তখনই তাঁর বাবা এবং তাঁর দাদা কারাবন্দি হন৷ তারা ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী৷ গুটিয়ে যান নিজের মধ্যে৷ থাকতেন, বেশির ভাগ সময়ই একা কাটাতেন৷ প্রয়োজন, মহাত্মা গান্ধী ইন্দিরার রাজনৈতিক জীবনকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছিলেন৷ সালে ইন্দিরার মা কমলা নেহেরু পরলোক গমন করেন৷ হয়ে পড়েন ভীষণভাবে একা৷ পড়াশোনা করার সময়ই ইন্দিরার পরিচয় হয় ফিরোজ গান্ধীর সঙ্গে৷ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন৷ সালে তিনি বিয়ে করেন সাংবাদিক ফিরোজ গান্ধীকে৷ কিছুদিন পরই তাঁরা কারাবন্দী হন৷ নৈনি কারাগারে তাঁরা ৮ মাস বন্দী থাকেন৷ গান্ধী দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।তারা হলেন সঞ্জয় এবং রাজীব৷

সভাপতি

সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন৷

প্রধানমন্ত্রী

সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে ব্রিটিশ শাসন থেকে৷ বছরই ইন্দিরার বাবা জওহরলাল নেহেরু স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন৷ থেকেই ইন্দিরা প্রায় ছায়ার মত বাবার পাশে পাশে থাকতেন৷ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন৷ সালে প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বচিত হন৷ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে ইন্দিরা গান্ধী দ্বিতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন৷ একটানা ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইন্দিরা গান্ধী৷ এই পর্যায়ে রাজন্য ভাতা বিলোপ, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের মত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কর্মসূচী রূপায়ন করেন৷ তৃৃতীয় ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে ভারত তার বলিষ্ঠ নেতৃৃত্বে জয়লাভ করে৷ মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে৷ সালে তিনি দেশে শান্তি এবং শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ জরুরি আইন জারী করেন৷ জন্য সমালোচিত হন ইন্দিরা গান্ধী৷

জীবন

মিলিয়ে প্রায় ১৫ বছর ভারত শাসন করেছেন ইন্দিরা গান্ধী৷ রাজনীতিবিদ ইন্দিরা গান্ধী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন ভারতে৷ বছর পর ভারত তথা বিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গণ স্মরণ করছে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে৷ গান্ধীর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আর কোন নারী এখনো আসেননি৷ রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন প্রতিভা পাটিল৷ সঞ্জয় গান্ধী বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান এবং আরেক পুত্র রাজিব গান্ধী এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় মারা যান। পুত্র বধু মানেকা গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধী বেঁচে আছেন। জীবনে তিনি অত্যন্ত শৌখিন মানুষ ছিলেন।

মৃত্যু

১৯৮৪ সালের জুন মাসে ইন্দিরা গান্ধীর আদেশে শিখদের পবিত্র ধর্মাশালা স্বর্ণ মন্দিরে ভারতীয় সেনা হানা দেয়৷ খেসারত ইন্দিরা গান্ধী দেন সে বছরই ৩১ অক্টোবর৷ নিজের দেহরক্ষীরাই তাঁর জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়৷